ছেলেবেলা লেখক- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সম্পাদনা- হায়াত মামুদ, চিত্রিত সংস্করণ পরিকল্পনা- আলমগীর রহমা

ছেলেবেলা

লেখক- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর,

সম্পাদনা- হায়াত মামুদ,

চিত্রিত সংস্করণ পরিকল্পনা- আলমগীর রহমান,

আশিস পাঠক
কলকাতা, ২২ মার্চ ২০১৩

বইটির মুদ্রণমানও রীতিমতো ভাল৷ ছবি- প্রতীক।

আত্মজীবনী বলে যে ধরনের রচনাকে আমরা ভাবতে অভ্যস্ত, রবীন্দ্রনাথ সে ধরনের বই লিখেছেন দুটি৷ একটি, নোবেল পুরস্কার পাওয়ার আগের বছর, ১৯১২-তে, জীবনস্মৃতি৷ আর একটি মৃত্যুর এক বছর আগে, ১৯৪০-এ প্রকাশিত হয়, ছেলেবেলা৷

এই দুটি বইকেই আমরা মূলত রবীন্দ্রনাথের আত্মজীবনী বলে থাকি৷ এর বাইরে আছে আত্মপরিচয়, তা বিভিন্ন সময়ে নিজেকে নিয়ে লেখা ছটি রচনার সংকলন৷ কিন্তু মুখ্যত দার্শনিক রচনা বলে আমরা সে বইকে প্রথাগত অর্থে আত্মজীবনীর তালিকাভুক্ত করি না৷

এ ক্ষেত্রে একটি কথা স্পষ্ট হয়৷ তা হল, কবির যে আমি নিত্য ঘটনার সূত্রে প্রকাশমান তাই আমাদের কাছে আত্মজীবনী৷ বাইরের আমির গভীরে যে ভিতরের আমি, নানা অলক্ষ্য ঘাত-প্রতিঘাতে যার নিয়ত সংগঠন তা আত্ম-দর্শন হতে পারে, কিন্তু আত্মজীবনী নয়৷

কিন্তু যা আত্মজীবনী তা কি শুধু শব্দ আর অক্ষর? কবির সেই সময়টা তো অনেকটাই ধরা থাকে ছবিতে৷ অথচ এখনও পর্যন্ত প্রকাশিত ছেলেবেলা-র যে নানা সংস্করণ সেখানে সেই ছবিরই বড় অভাব৷ এই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের প্রতীক প্রকাশনা সংস্থা থেকে যে ছেলেবেলাটি প্রকাশিত হয়েছে তা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ৷ প্রাসঙ্গিক বহু আলোকচিত্র এবং অঙ্কন দিয়ে সাজানো এই সংস্করণটির প্রাককথন লিখেছেন ও সম্পাদনা করেছেন হায়াত মামুদ৷ আর গোটা সংস্করণটির পরিকল্পনায় আছেন আলমগীর রহমান৷

কিন্তু এ পরিকল্পনার অভিনবত্ব কোথায়? সাধারণত ছেলেবেলা চিত্রিত করতে গিয়ে কয়েকটি অলঙ্করণেই কাজ সারা হয়৷ কিন্তু এখানে প্রাসঙ্গিক ব্যক্তি ও স্থানের ছবি ছাড়াও ঘটনাকে অলঙ্কৃত করতে নতুন ছবিরও সাহায্য নেওয়া হয়েছে৷ যেমন কুস্তির আখড়া, বিভিন্ন রকম পাল্কি, নাচগান, সে কালের যাত্রা ইত্যাদি৷ আর তার ফলেই একটা অনায়াস যোগসূত্র স্থাপিত হয়েছে সে কাল ও এ কালের মধ্যে৷

বইটির মুদ্রণমানও রীতিমতো ভাল৷ সম্পাদক এর সঙ্গে বিশেষ টীকায় দিয়েছেন বহু আনুষঙ্গিক তথ্য৷