চট্টগ্রামের ‘বাতিঘর’ প্রকাশক কর্নারে থাকবে অবসর, প্রতীক, নির্বাচিত বই

চট্টগ্রাম: দেশের সবচেয়ে বড় সৃজন ও মননশীল গ্রন্থবিপণি কেন্দ্র বাতিঘরের বাতি জ্বালিয়ে উদ্বোধন করেছেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।

তিনি বলেন, মানুষের আত্মা অপরাজিত, কখনো মৃত্যু নেই আত্মার। হতে পারে কখনো বিপদে পড়ে, অন্ধকারে পথ হারিয়ে ফেলে। একেকটি বই হচ্ছে একেকজন বড় মানুষের আত্মা। বাতিঘরে বড় বড় মানুষের আত্মার আলো জ্বলছে, জ্বলজ্বল করছে।

শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ভবনের নিচতলায় নতুন আঙ্গিকে সাজানো এ গ্রন্থবিপণির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বসেছিল এ জনপদের নবীন-প্রবীণ কবি-সাহিত্যিক-শিল্পী-নাট্যজন ও সংস্কৃতিকর্মীদের মিলনমেলা।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ১ মিলিয়ন পাঠক আছে উল্লেখ করে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, আশাকরছি কিছু দিনের মধ্যেই পাঠকসংখ্যা ৩ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে। দেশের প্রত্যেক মানুষ, প্রতিটি বাড়ির দরজায় বই পৌঁছে দিতে চাই। ৫৬ জেলায় ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি আছে।

বই বিপণিকেন্দ্রের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা কর্মসূচি দিয়ে মানুষের হৃদয় জাগিয়ে দিতে পারি। এর জন্য প্রতিটি জায়গায় বইয়ের দোকান গড়ে তুলতে হবে। এখন শিক্ষার উদ্দেশ্য হয়ে গেছে টাকা কামানো। পাঠ্যবই মানে জ্ঞান নয়। ‘লেখা পড়ে করে যে গাড়ি ঘোড়ায় চড়ে সে’ এটাই হয়েছে অভিভাবকের উপলব্ধি। তাই তাদের ভাবখানা এমন, ‘যদি না পড়িস পিঠিয়ে পড়াব, দরকার হলে মেরে ফেলব।’

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন বরেণ্য কবি নির্মলেন্দু গুণ।

বাতিঘর চট্টগ্রামে আলো ছড়াবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সব বিচারে এ বাতিঘর একটি অনন্য গ্রন্থবিপণি, বাংলাদেশের মানুষের জন্য এটি গর্ব করার বিষয়।’

তিনি বলেন, বাতিঘর যখন চেরাগি পাহাড় মোড়ে ছোট্ট পরিসরে যাত্রা শুরু করেছিল তখন আমি উদ্বোধন করেছিলাম। আজ ছয় বছর পরে এসে মূল বাতিঘরকে ছাড়িয়ে গেছে শাখা বাতিঘর। আশা করি, নতুন নতুন শাখা বিস্তার করে গ্রন্থ জগতে আরো বেশি অবদান রাখবে বাতিঘর।

কবি বিশ্বজিৎ চৌধুরী সঞ্চালনে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন খ্যাতিমান ভৌতবিজ্ঞানী ড. জামাল নজরুল ইসলাম, কবি আবুল মোমেন, চট্টগ্রামের ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সোমনাথ ঘোষ ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু সুফিয়ান।

ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সোমনাথ ঘোষ বলেন, বাতিঘর বইয়ের রাজ্য। আমাদের মনোজগত আলোকিত হয়েছে বই পড়ে। পাশাপাশি রেডিওর অনুষ্ঠান, নাটক ইত্যাদি শুনতাম। এখন টেলিভিশন, ইন্টারনেটসহ নতুন নতুন জিনিস যুক্ত হচ্ছে। তারপরও বইয়ের জনপ্রিয়তা এতটা কমেনি। বই হচ্ছে ভালোলাগার, ভালোবাসার এবং চিরন্তন।

বাংলাদেশের বইয়ের অঙ্গসজ্জা ও ঝকঝকে মুদ্রণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওপার বাংলায় এখানকার বই সহজলভ্য হওয়া দরকার। এতে দুদেশের সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটবে।