বৃক্ষছায়ায় চিরনিদ্রায় হুমায়ূন

হুমায়ূনের প্রথম স্ত্রী গুলতেকিন আহমেদের মেয়ে শীলা ও নোভা, দ্বিতীয় স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন এবং তাদের দুই সন্তান নিষাদ ও নিনিত, লেখকের ভাই মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও আহসান হাবীব এবং তাদের দুই বোনও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের হিমঘর থেকে হুমায়ূনের মরদেহ নিয়ে গাজীপুরের উদ্দেশে রওনা হয় একটি অ্যাম্বুলেন্স। ওই অ্যম্বুলেন্সের সঙ্গেই বেলা ১২টা ৫ মিনিটে নুহাশ পল্লীতে পৌঁছান শাওন ও তার দুই সন্তান। এর কিছুক্ষণ আগেই নুহাশ, শীলা ও নোভাকে নিয়ে পৌঁছান জাফর ইকবাল ও আহসান হাবীব।
নুহাশ পল্লীর ভাস্কর আসাদুজ্জামান খাঁন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সোমবার গভীর রাতে ঢাকায় পরিবারের সদস্যরা লেখকের দাফনের স্থান চূড়ান্ত করার পর সকালেই তারা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। সকালেই সেখানে কবর খোঁড়া শুরু হয়।
হুমায়ুন আহমেদকে শেষ বিদায় জানাতে ভক্তরা সকাল থেকেই নূহাশ পল্লীতে ভিড় করতে শুরু করেন। মাঝে মধ্যে হালকা বৃষ্টি হলেও তারা অপেক্ষা করতে থাকেন প্রিয় লেখকের জন্য। এক পর্যায়ে পিরুজালি প্রাম থেকে নুহাশ পল্লী পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কও লোকারণ্যে পরিণত হয়।
বেলা দেড়টার দিকে স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম মজিবুর রহমানের পরিচালনায় হুমায়ূনের জানাজায় অংশ নেন হাজারো মানুষ। এর পরপরই তাকে শোয়ানো হয় লিচু তলায় খোঁড়া কবরে, যে স্থানটিতে শেষ শয্যায় শায়িত হওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়ে গিয়েছিলেন তিনি অনেক আগেই।
গত ১৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে মারা যান ক্যান্সারে আক্রান্ত হুমায়ূন আহমেদ। সেখানেই তার প্রথম জানাজা হয়। সোমবার সকালে তার মরদেহ দেশে পৌঁছানোর পর দুপুরে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে তার দ্বিতীয় জানাজা হয়।
মঙ্গলবার দাফনের বিষয়টি চূড়ান্ত হলেও লেখককে কোথায় সমাহিত করা হবে তা নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত মতবিরোধ চলে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে।

হুমায়ুনের বর্তমান স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন নুহাশ পল্লীতেই স্বামীর কবর চাইলেও সাবেক স্ত্রী গুলতেকিন আহমেদের সন্তানরা তাদের বাবাকে ঢাকায় দাফনের পক্ষে মত দেন। এই নিয়ে দিনভর টানাপোড়েন চলে।

পরিবারের মধ্যে মতদ্বন্দ্বের অবসানে স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নেতারা কয়েক দফা দুই পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন।

এরপর রাত আড়াইটার দিকে সংসদ ভবন এলাকায় নানকের বাড়ি থেকে বেরিয়ে হুমায়ূনের ভাই মুহম্মদ জাফর ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, নুহাশ পল্লীতেই দাফনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/জেকে/১৪৩০ ঘ.